তার বন্দুকে মাত্র দুটি গুলি ছিল

লোকটির পিতা এতই বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিল যে সে চোখে খুব সামান্য দেখতো, তার চামড়া ঝুলে গিয়েছিল এবং অন্যের সাহায্য ছাড়া চলাফেরা করা তার জন্যে কষ্টকর ছিল। বৃদ্ধলোকটির একটি কুকুর ছিল যেটি তার থেকেও বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। কুকুরটি পুরোপুরি অন্ধ হয়ে গিয়েছিল, তার গা দিয়ে খুব দুর্গন্ধ ছড়াতো আর সে তার বিছানা থেকে নড়ত না। কুকুরটিকে বৃদ্ধ পিতা বাইরে বের করে দিতে দিত না, খুব ছোটবেলা থেকে কুকুর ছানাকে তিনি বড় করেছেন এবং সব সময় তার পাশেই থাকতে চাইতেন।

লোকটির দিনের বড় অংশ কেটে যেত তাদের দুজনের পরিচর্যায়। সহ্যহীনতা আর বিরক্তিতে তার স্ত্রী বাপের বাড়ি চলে গেছে। অন্যান্য ভাইবোনেরা খুব বেশি আসতো না। দুর্গন্ধের কারণে কাজের লোকও বেশিদিন কাজ করতে চায় না। লোকটি তার প্রায় বধির পিতাকে বোঝানোর চেষ্টা করল কুকুরটিকে যদি সরিয়ে বাইরে রাখার বাবস্থা করা হয় তাহলে একজন কাজের লোক হয়ত পাওয়া যেতে পারে এবং তার স্ত্রীও ফিরে আসতে পারে। কিন্তু বৃদ্ধ পিতা কোন ক্রমেই রাজি হত না বরং আরও জেদ করত।

পিতার সেবাযন্তে যদিও তার ত্রুটি ছিল না কিন্তু ধীরে ধীরে তার ধৈর্যও কমতে লাগলো। এমনি একদিন ভোরবেলায় কুকুরটির গলায় একটা রশি পেঁচিয়ে টানতে টানতে বাড়ির পাশে জঙ্গলে নিয়ে গেল। তারপর ঘাড়ের ঠিক পিছনে বন্দুক রেখে সোজা গুলি চালাল। কুকুরটি মাটিতে শুধু পড়ে গেল, নড়াচড়া করতে পারলো না।

বন্দুকটি রেখে লোকটি কোদাল দিয়ে মাটি খুঁড়ছিল কুকুরটিকে একবারে মাটি চাপা দিয়ে যাবে বলে। কেউ যেন তার পিছনে এসে দাঁড়িয়েছে বলে তার মনে হল, ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল তার বৃদ্ধ পিতা। আর তখন আরও একটা গুলির আওয়াজ হল।
২২-১২-২০১৮

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *